মোহাম্মদ হাছানের একটি গল্প A story of Mohammed Hasan.
তারিখঃ ১২/০৫/২০২০
বড় আপা তোদেরকে খুব মিস করছি।ছোটো বেলার কথা এখন খুবই মনে পড়ে। আজ কয়েকটাদিন অবশ্য বেশিই মনে পড়ছে। কেমন আসিছ তোরা?
আশা করি ভালো, তবে দেশ বিদেশে করোনার যে থাবা চলছে ভালো ই বা কেমন করে থাকবি। ৯৭/৯৮ এর কথা তখন তোরা সকলেই বাড়িতে ছিলি। তখন তোরা সকলে হাইস্কুলে পড়তিস আর আমরা তিনজন তানিয়া, টুম্পা আর আমি পড়তাম প্রাইমারিতে।আমরা সকল ভাইবোন মিলে খুবই আনন্দে দিন কাটিয়েছি, তা আজ সুদুর অতিতের মধুর স্মৃতি ছাড়া আর কী হতে পারে বল!আরও
আশা করি ভালো, তবে দেশ বিদেশে করোনার যে থাবা চলছে ভালো ই বা কেমন করে থাকবি। ৯৭/৯৮ এর কথা তখন তোরা সকলেই বাড়িতে ছিলি। তখন তোরা সকলে হাইস্কুলে পড়তিস আর আমরা তিনজন তানিয়া, টুম্পা আর আমি পড়তাম প্রাইমারিতে।আমরা সকল ভাইবোন মিলে খুবই আনন্দে দিন কাটিয়েছি, তা আজ সুদুর অতিতের মধুর স্মৃতি ছাড়া আর কী হতে পারে বল!আরও
কানামাছি |
তোরা তো জানিস পড়াশোনা শেষ করে গেল বছর আমি নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছি। ডিপিএড এখনো শেষ হয়নি, মাত্র স্কুলে পাঠদান আরম্ভ করেছি এরই মাঝে শুরু হয়ে গেল কী এক কঠিন দূর্যোগ।স্কুল বন্ধ, হাটে-বাজারে আড্ডা বন্ধ, মসজিদে তারাবী হচ্ছে না।কেমন কঠিন সময় যাচ্ছে! তোদের ওখানে ও তাই জানি।তোদের সময় জানি বাচ্চাদের সামলাতে আর সংসার নিয়ে ভেবে কাটছে।
আর আমি ছাত্রজীবন এর শখের কাজ গুলো করে সময় পার করাছি।শখ করে তখন বাড়িতে টুকটাক বাগান করতাম। এখন সেটা করছি একা একা সময় কাটানোর প্রয়োজনে।আলহামদুলিল্লাহ ভালো ই করেছি পেঁপেঁ গাছে ফুল এসেছে, কুমড়া গাছ মাছায় উঠেছে, পাটশাক আর ডাটাশাক মা তুলবে বলেছে কাল পরশু। ওহপ বলিনি বেগুন
গাছেও বেগুন আসছে। সকাল বিকাল ঘুম আর মাঝে মধ্যে বাগানে পানি বা আগাছা পরিষ্কার করছি।এভাবেই আলস্য দিনযাপন করছি।
আমাদের বাড়ির বিশাল উঠানটার পূর্ব পাশে আমাদের ঘরের ধারে পূর্নিমার আলোতে বসে আমরা তিন ভাই ও বাবা টুকটাক সাংসারিক ও দেশের খবরাখবর আলোচনা করলাম আজ। এখন রমজানের মাঝামাঝি। তাই সকলেই যারযার কক্ষে চলে গেল শুয়ে যাওয়ার জন্য।আমি একটু উঠোনে পায়চারি করবো তাই রয়ে গেলাম।
একটু ঘুরাঘুরি করে আমি গিয়ে থামলাম কাচারি ঘরটার পাশের জাম্বুরা গাছটার নিচে,যদিও ওখানে এখন দালান উঠেছে সেই খড়ের ছাউনির ঘরখানা নাই তবে গাছটা ঠিকই আছে। গাছের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেই আগের মতোই ফল ধরে আছে চির কৃতজ্ঞচিত্তে। খানিকের জন্য আমি যেন কোথায় হারিয়ে গেলাম! হঠাৎ দেখি কিছু ছোটো বড় শিশু আমার আশেপাশে ঝিঝিপোকার মতো পেছনে আলো জালিয়ে রেখে এক্কা দোক্কা খেলছে। আমি যেন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সবচেয়ে বড় আলোর মেয়েটা বড় আপা, তারপরের আলোটা শেফালী আপা, তার পাশের টা নীপাদীর। একটু দূরে ২টি সমান আলোর ঝলকানি নিজেদের মধ্যে কী যেন কানাকানি করতেছে। ওরা দুজন শীল্পী আর মন্জু আপা। তারপর পশ্চিমের ঘর থেকে একটা আলো, দক্ষিণের ঘর থেকে একটা আর আমাদের ঘর থেকে একটা ছোট্ট আলো ধেয়ে আসে। বড় আপাদেরকে জড়িয়ে ধরে বলতে থাকে কানামাছি, রুমাল চোর,ফুলটোকা
খেলবো। শেফালী আপা তখনও খুব মাস্টারছিল। চেচিয়ে উঠলো থাম সবাই। কাছে আসো। সব খেলা হবে। আবার চিৎকার কী মজা কী মজা! সব খেলবো খুব মজা।
খেলা শুরু হয়ে গেলো – কানা মাছি বো বো যাকে পাবি তাকে ছো। পারুল আপা যেই ধরতে গেলো শীল্পী আপাকে পরে গেলো হোছট খেয়ে। তখন বন্ধ হলো কানামাছি খেলা। তখন একজন বললো আরে আমরা রুমাল চোর খেলবো। বলতে দেরী শুরু হয়ে গেল। সবাই গোল হয়ে বসে গেল আর সেই শেফালী আপা রুমাল নিয়ে ঘুরতে লাগলেন সকলের পিছনে। এরই মাঝে কী হলো বুঝলাম না, রুমাল খেলা বাদ দিয়ে সকলকে ডেকে ২ টি দলে ভাগ করে ফেললো। প্রতি দলে আমরা দলনেতাসহ ৪ জন। আমি শেফালী আপার দলে। আমাদের কে ফুলের নাম দিলো।আমি গোলাপ, তানিয়া শাপলা - - -এর মাঝেই আমার ফোনটা বেজে উঠলো। আর আমি বর্তমানে ফিরে আসলাম।
Supari Shell Car সুপারি খোলের গাড়ি। |
বড় আপা তোদের কী মনে পড়ে সেইদিন গুলোর কথা? তোদের সকলেরই দাওয়াত রইলো বড় আপা। এইবার যদি করোনা ছেড়ে যায় এই দেশের আকাশ থেকে আমরা চুটিয়ে আড্ডা দিবো,লুকোচুরি খেলবো, মুচি আর কলার মোচার ভর্তা বানিয়ে খাবো প্রাণ ভরে!
Written By
Mohammed Hasan
( Teacher of Govt. Primary School )
Written By
Mohammed Hasan
( Teacher of Govt. Primary School )
2 comments:
Comments your great thinks.
Nice
Post a Comment