বিষয়ঃ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
চতুর্থ শ্রেণির কতিপয় শিক্ষার্থীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠী শনাক্ত করতে না পারার কারণ অনুসন্ধান
এবং সমাধানের উপায় ।
সম্পাদনায়
|
মোহাম্মাদ হাছান
ডি পি এড শিক্ষার্থী শিক্ষক
প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ঃ তুলাবাড়িয়া স• প্রা• বি• ।
প্রাইমারি টিচার্স ট্রেইনিং ইন্স্টিটিউট ,ফেণী।
চতুর্থ শ্রেণির কতিপয় শিক্ষার্থীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠী শনাক্ত করতে না পারার কারণ অনুসন্ধান
এবং সমাধানের উপায় ।
ভুমিকাঃ বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় একটি সমন্বিত বিষয় । এর বিষয়বস্তু বিভিন্ন
সামাজিক ও মানবীয় বিষয়াবলী থেকে গ্রহণ করা হয় । এটি বিভিন্ন বিষয়বস্তুকে
বিছিন্নভাবে না পড়ে বরং আন্তঃসম্পর্কিত বিষয়সমূহ সমন্বিত করে পঠন –পাঠনের নীতি মেনে চলে। এভাবে পঠন –পাঠনের তাৎপর্য হলো শিক্ষা সেটাকে ভালোভাবে বুঝতে পারে এবং একটির
সাথে অপরটির আন্তঃসম্পর্ক উপলব্ধি করতে সক্ষম হয় । আর এই জন্যই বাংলাদেশের প্রাথমিক
শিক্ষাস্তরের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়টি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের (যেমন- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ,ইংল্যান্ড ,কানাডা , অস্ট্রেলিয়া
, চীন, ভারত, ইত্যাদি)
প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে প্রচলিত ‘সোশ্যাল স্টাডিজ’
এবং বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে প্রচলিত ‘সামাজিক বিজ্ঞান’ এর অনুরূপ। ‘সোশ্যাল স্টাডিজ’ বা সামাজিক বিজ্ঞান এর মতো এটি বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক
গুনাবলির একটি বিষয় ।
পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম অনুসারে ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তরের ‘পরিবেশ পরিচিতি সমাজ’
বিষয়টির নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’
রাখা হয়েছে। এছাড়া মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরেও ‘সামাজিক, বিজ্ঞান’ বিষয়টির নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্পরিচয়’। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ক্রমে অষ্টম শ্রেণি
পরজন্ত উন্নীত করা হচ্ছে। এসব দিকে লক্ষ রেখে ডি.পি.এড প্রোগ্রামে ও সি.ইন.এড কোর্সের
‘পরিবেশ পরিচিতি সমাজ’ বিষয়টির নামকরণ করা হয়েছে
‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’।
একটি সমন্বিত বিষয় হিসেবে বাংলাদেশ ও বিশবপরিচয় বিষয়টির একটি সুস্পষ্ট ও
প্রাসঙ্গিক সামাজিক লক্ষ রয়েছে। আর তা হলো শিশুদের একটি সামাজিক দল হিসেবে বসবাসের
সামর্থ্য অর্জনে সহায়তা দেওয়া। সমাজের সকল জাতিগোষ্ঠীর প্রতি শ্রাদ্ধাশীল হওয়া।
যেমন ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ের’ একটি অন্তর্ভুক্ত বিষয় হল ‘বাংলাদেশের ক্ষুদ্র
নৃ- গোষ্ঠী’ বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তা’এই সকল ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীরাও এ দেশের নাগরিক।
তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, পোশাক, উৎসব ইত্যাদি বাঙ্গালী সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে। তাই
মূল ধারার বাঙ্গালী ও ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীদের মধ্যে সম্প্রীতির গুরুত্ব উপলব্ধি
করার জন্য শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠী সম্পর্কে জানা আবশ্যক।
আমি ৩য় টার্মে অনুশীলন বিদ্যালয় ‘তুলাবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’
চতুর্থ শ্রেণির বেইজলাইন মূল্যায়নের মাধ্যমে দেখতে পেলাম ৪/৫ জন শিক্ষার্থী ছবি
দেখে ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীদের ( চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও মণিপুরি )শনাক্ত করতে পারে
না। তাদের এই অবস্থা আমাকে বিচলিত করে। যেহেতু ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীদের জীবনধারা(ক্ষুদ্র
নৃ- গোষ্ঠী
শনাক্ত করণ) বিষয়টি প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষাকৃত জটিল। তাই
কিভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা যায় তা নিয়ে আমি কাজ করি। তারই
প্রেক্ষাপটে আমি উল্লেখিত শিরোনামের কর্মসহায়ক গবেষণাটি হাতে নিয়েছি।
গবেষণার যৌক্তিকতা
বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জীবনধারা এবং এক নৃ-গোষ্ঠীর সাথে অন্য নৃ-গোষ্ঠীর
জীবনধারার পার্থক্য করা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য জটিল বিধায় বিষয়টি
তাদের জন্য নিরানন্দময়। শ্রেণীকক্ষে কার্যকর শিখন শেখানোর কৌশল অবলম্বন না করার
কারণে শিক্ষার্থীরা সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে বুজতে পারে না। ফলে শিক্ষার্থীদের
শ্রেনীভিত্তিক অর্জন উপযোগী যোগ্যতাগুলো অর্জিত হয় না । জার ফলে প্রাথমিক স্তরে
প্রান্তিক যোগ্যতাগুলো ও সঠিকভাবে অর্জিত হয় না। ফলশ্রুতিতে মানসম্মত প্রাথমিক
শিক্ষা অরজনের প্রত্যয়টি ও বাধাগ্রস্ত হয়। তাই মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের
লক্ষ্যে বিষয়টিকে শিক্ষার্থীদের নিকট জীবন উপযোগী করতে শিক্ষকের সহায়তা আবশ্যক।
শিক্ষা যে জীবনভিত্তিক তা বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে যদি শিক্ষাদান করা যায় তাহলে
শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ের প্রতি মনোযোগী হবে। আমি ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিশয়টিতে
শিখন শেখানো কার্যক্রমে বিভিন্ন ধরনের কাজের মাধ্যমে (যেমনঃ পর্যবেক্ষণ,উপস্থাপন,
প্রতিফলন,অনুসন্ধান,শ্রেনিকরন,উপলব্ধি, প্রয়োগ,বোধগম্যতা প্রভৃতি) শিক্ষার্থীদের
নিকট আনন্দদায়ক করে তোলার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান ও বোধগম্যতা
তৈরিতে এ ধরনের গবেষণা পরিচালনা যৌক্তিক বলে আমি মনে করি।
গবেষণার উদ্দেশ্য
আমার এই গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে নিম্নোক্ত ইতিবাচক দিকগুলো প্রতিফলিত হবে
বলে আশা করি।
১। শিক্ষার্থীরা পোশাকের ভিন্নতা অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের চিহ্নিত করতে
পারবে।
২। বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী (চাক্মা,মারমা,সাওতাল ও মণিপুরি) এর উৎসব সম্পর্কে বলতে
পারবে এবং উৎসবের ভিন্নতা অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের শনাক্ত করতে পারবে।
৩। নৃ- গোষ্ঠীর ভাষাগত ভিন্নতা অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের শনাক্ত করতে
পারবে।
৪। বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠী (চাক্মা,মারমা,সাওতাল ও মণিপুরি) এর ধর্মীয় আচার
অনুষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য করতে এবং ভিন্নতা অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের চিহ্নিত
করতে পারবে।
৫। বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী এর গ্রামীন জীবনের মধ্যে পার্থক্য করতে পারবে এবং ভিন্নতা
অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের শনাক্ত করতে পারবে।
এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আরও কিছু যোগ্যতা অর্জিত হবে বলে আশা করছি। যেমনঃ
ক। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে।
খ। মূল ধারার বাঙালি ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মধ্যে সম্প্রীতির গুরুত্ব উপলব্ধি
করবে ভ্রাতৃত্ব বোধ জাগ্রত হবে।
গবেষণা পদ্ধতি ও টুলস
এই গবেষণাটি পরিচালনার জন্য আমি নিম্নোক্ত পদ্ধতিটি অনুসরণ করেছি।
· পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ।
উপরোক্ত উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আমি যেসব টুলস
ব্যবহার করেছি তা হলঃ
· পর্যবেক্ষণ পত্র ,
· অভিক্ষাপত্র ।
সম্ভাব্য কারণ
ভিন্নতা অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের (চাকমা ,মারমা,সাওতাল ও
মণিপুরি) শনাক্ত করতে না পারার সম্ভাব্য কারণ গুলো হলঃ
১। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নাম না জানা।
২। শিক্ষার্থী সাবলীল পাঠক না হওয়া।
৩। ছবি দেখে ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর মানুষকে শ্রেণীকরণ করতে না পারা।
৪। বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, পোশাক, পেশা, খাদ্য, আবাস প্রভৃতি সম্পর্কে
প্রামাণ্য চিত্র/ ভিডিও দেখে আলোচনায় অংশগ্রহণ না করা।
সম্ভাব্য সমাধানের উপায়
১। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নাম জানাব ।
২। শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের অনুচ্ছেদ সমূহ পড়ে শুনাব ।
৩। ছবি দেখে ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর মানুষকে শ্রেণীকরণ করতে দিবো ।
৪। বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, পোশাক, পেশা, খাদ্য, আবাস প্রভৃতি সম্পর্কে
প্রামাণ্য চিত্র/ ভিডিও দেখে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে দিবো ।
তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ
চতুর্থ শ্রেণির বেইজলাইন মূল্যায়নের ফলাফল বিশ্লেষণের মাধ্যমে ৫জন
সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করি এবং পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় তথ্য
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি।
নির্বাচিত ৫ জন সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী
সম্পর্কে জানানোর জন্য ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ের পাঠ পরিচালনার সময় দৈনিক ১০
মিনিট বরাদ্দ রেখে বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করি। যার জন্য নিম্নোক্ত পরিকল্পনা
করিঃ
ক্রমিক নং
|
বিবরণ
|
তারিখ
|
১
|
বাংলাদেশে বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠী
সম্পর্কে আলোচনা করবো।
|
|
২
|
চাকমাদের সম্পর্কিত
অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাব।
|
|
৩
|
মারমাদের সম্পর্কিত
অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাব।
|
|
৪
|
সাঁওতালদের সম্পর্কিত
অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাব।
|
|
৫
|
মনিপুরিদের সম্পর্কিত
অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাব।
|
|
৬
|
চাকমা ,মারমা, সাঁওতাল ও
মনিপুরিদের ছবি দেখে দেখে শনাক্ত করতে সহায়তা দিবো।
|
|
৭
|
চাকমা ,মারমা, সাঁওতাল ও
মনিপুরিদের ছবি দেখে শ্রেণীকরণ করতে দিবো।
|
|
৮
|
বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা,
পোশাক, পেশা, খাদ্য, আবাস প্রভৃতি সম্পর্কে প্রামাণ্য চিত্র/ ভিডিও দেখে নিজেদের
মধ্যে আলোচনা করতে দিবো ।
|
|
বাস্তবায়ন
নির্বাচিত ৪ জন শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের (চাকমা ,মারমা,
সাঁওতাল ও মনিপুরি) শনাক্ত করতে পারার জন্য ১০ কার্য দিন ভাগ করে বিভিন্ন ধরনের
কার্য পরিচালনা করি।
০২/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশে বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কে আলোচনা করি ।
১৯/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে চাকমাদের সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাই এবং ছোট ছোট
প্রশ্ন করে যাচাই করি ।
২০/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে মারমাদের সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাই এবং ছোট ছোট
প্রশ্ন করে যাচাই করি ।
২১/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে সাঁওতালদের সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাই এবং ছোট ছোট
প্রশ্ন করে যাচাই করি ।
২২/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে মণিপুরিদের সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পড়ে শুনাই এবং ছোট ছোট
প্রশ্ন করে যাচাই করি ।
২৪/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে চাকমা ,মারমা, সাঁওতাল ও মনিপুরিদের ছবি দেখে
শ্রেণীকরণ করতে দিয়েছি ।
২৬/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, পোশাক, পেশা, খাদ্য, আবাস
প্রভৃতি সম্পর্কে প্রামাণ্য চিত্র/ ভিডিও দেখে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে দিয়েছি
যাতে করে সহজেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শনাক্ত করতে পারে।
৩০/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে শিক্ষার্থীদের শিখন অগ্রগতি যাচাইয়ের লক্ষ্যে
অভিক্ষাপত্রের মাধ্যমে একটি অভিক্ষা পরিচালনা করি।
পর্যবেক্ষণ ও প্রতিফলন
· প্রথমদিন বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্পর্কে আলোচনার
মাধ্যমে সাধারণ ধারনা দিয়েছি। যার ফলে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে বসবাসকারী
নৃ-গোষ্ঠীর সংখ্যা এবং চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও মনিপুরিদের নাম জানতে পেরেছে।
· আলোচনা শেষে তাদেরকে নিম্নোক্ত ছকটি পূরণ করতে দিয়েছিঃ
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নাম
|
আবাস
|
|
|
· দ্বিতীয় দিন চাকমা জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পাঠ করে
শুনাই এবং তাদেরকে পাঠ করতে সহায়তা প্রদান করি এবং শিক্ষার্থীদের নিম্নোক্ত ছকটি
পূরণ করতে দিয়েছিঃ
বাড়ি
|
খাদ্য
|
কৃষি
|
|
|
|
· তৃতীয়দিন মারমা জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পাঠ করে শুনাই
এবং তাদেরকে পাঠ করতে সহায়তা প্রদান করি এবং শিক্ষার্থীদের নিম্নোক্ত ছকটি পূরণ
করতে দিয়েছিঃ
বাড়ি
|
খাদ্য
|
পেশা
|
|
|
|
· চতুর্থ দিন সাঁওতাল জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পাঠ করে
শুনাই এবং তাদেরকে পাঠ করতে সহায়তা প্রদান করি এবং শিক্ষার্থীদের নিম্নোক্ত ছকটি
পূরণ করতে দিয়েছিঃ
বাড়ি
|
উৎসব
|
পোশাক
|
|
|
|
· পঞ্চমদিন মণিপুরি জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত অনুচ্ছেদ পাঠ করে
শুনাই এবং তাদেরকে পাঠ করতে সহায়তা প্রদান করি এবং শিক্ষার্থীদের নিম্নোক্ত ছকটি
পূরণ করতে দিয়েছিঃ
নৃ- গোষ্ঠীর নাম
|
নিজস্ব ভাষা
|
বর্ণমালা
|
চাকমা
|
|
|
মারমা
|
|
|
সাঁওতাল
|
|
|
মণিপুরি
|
|
|
· ষষ্ঠ দিন চাকমা ,মারমা, সাঁওতাল ও মনিপুরিদের ছবি প্রদর্শন
করি শ্রেনিতে এবং ছবি দেখে শ্রেণীকরণ করতে দিয়েছি ।
নৃ- গোষ্ঠীর নাম
|
দৈহিক গঠন
|
পোশাক
|
উৎসব
|
চাকমা
|
|
|
|
মারমা
|
|
|
|
সাঁওতাল
|
|
|
|
মণিপুরি
|
|
|
|
· সপ্তমদিন বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, পোশাক, পেশা, খাদ্য,
আবাস প্রভৃতি সম্পর্কে প্রামাণ্য চিত্র/ ভিডিও দেখিয়েছি ক্লাশে এবং তা দেখে
নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে দিয়েছি যাতে করে সহজেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শনাক্ত করতে
পারে।
· নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে নিম্নোক্ত ছক পূরণ করতে দিয়েছিঃ
নৃ- গোষ্ঠীর নাম
|
বাড়ি/
আবাস
|
পেশা
|
খাবার
|
গ্রাম প্রধান
|
ধর্ম
|
পোশাক
|
উৎসব
|
চাকমা
|
|
|
|
|
|
|
|
মারমা
|
|
|
|
|
|
|
|
সাঁওতাল
|
|
|
|
|
|
|
|
মণিপুরি
|
|
|
|
|
|
|
|
পদ্ধতিগত পাঠদান শেষে সমস্যাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের অবস্থান
ছক
রোল নং
|
শিক্ষার্থীর নাম
|
অনুচ্ছেদ শুনে বুঝে
|
অনুচ্ছেদ পড়ে বুঝতে পারে
|
ছবি দেখে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী
শনাক্ত করতে পারে
|
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা
সম্পর্কে বলতে পারে
|
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের খাবার
সম্পর্কে বলতে পারে
|
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের পোশাক
সম্পর্কে বলতে পারে
|
৪১
|
প্রাপ্তি দাশ
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
৫২
|
জসিম উদ্দীন
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
৫৭
|
ফারহানা
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
৫৯
|
আঁখি
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
৬০
|
নিশান দাস
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
√
|
Ø পদ্ধতিগত পাঠদানের সময় দেখি যে ,শিক্ষার্থীরা অধ্যায়টি বুঝতে
পারার ফলে শেখার প্রতি তাদের আগ্রহ ও মনোযোগ দুটোই বেড়েছে। এছাড়াও ভিডিওর মাধ্যমে
তারা চাকমা ,মারমা, সাঁওতাল ও মনিপুরিদের অর্থাৎ বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, পোশাক,
পেশা, খাদ্য, আবাস প্রভৃতি সম্পর্কে সচিত্র প্রতিবেদন দেখায় তাদের শিখন আরও স্থায়ী
হয়েছে।
Ø শিক্ষার্থীদের ছকে বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে তুলনা করতে
দিলে তারা সহজেই পারে। যা তারা পূর্বে পারতোনা ।
Ø এছাড়া বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর বাসস্থান মানচিত্রে নির্দেশ করে
দেখানোর ফলে তারা সহজে সেগুলো মনে রাখতে পারছে। যা পূর্বে তাদের নিকট কিছুতা জটিল
ছিল।
Ø বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর জীবনধারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে তুলনামূলক
আলোচনা করতে দিলে তারা খুব আগ্রহ নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়। পূর্বে তাদের মধ্যে যে
অনীহা ছিল তা অনেকাংশে দূর হয়ে গিয়েছে।
মূল্যায়ন ও ফলাফল বিশ্লেষণ
গৃহীত পদক্ষেপের আলোকে পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন যাচাই করার জন্য
সংযুক্ত অভিক্ষাপত্রের মাধ্যমে ৩০/১০/২০২০ খ্রিঃ তারিখে মূল্যায়ন করি।
অভীক্ষাপত্রের আলোকে
শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত ফলাফল নিম্নে সারণিতে তুলে ধরা হলঃ
রোল নং
|
শিক্ষার্থীর
নাম
|
প্রাপ্ত নম্বর
|
শতকরা হার
|
৪১
|
প্রাপ্তি দাশ
|
১৭
|
৮৫%
|
৫২
|
জসিম উদ্দীন
|
১৯
|
৯৫%
|
৫৭
|
ফারহানা
|
১৬
|
৮০%
|
৫৯
|
আঁখি
|
১৭
|
৮৫%
|
৬০
|
নিশান দাস
|
১৮
|
৯০%
|
কর্মসহায়ক গবেষণায় গৃহিত কর্মসূচী অনুযায়ী পদ্ধতিগত
পাঠদানের পর অভিক্ষাপত্রের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখতে পাই সমস্যাগ্রস্ত
শিক্ষার্থীদের সকলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পেশা, আবাস, শিক্ষা, খাদ্য সম্পর্কে বলতে
পারে। উৎসবের নাম অনুযায়ী ক্ষুদ্র
নৃগোষ্ঠীর নাম বলতে পারে। পোশাকের নাম অনুযায়ী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শনাক্ত করতে পারে।
ছবি দেখে ২ জন শিক্ষার্থী চাকমা ও মারমাদের মধ্যে গুলিয়ে ফেলে। অপর ১ জন
শিক্ষার্থী ভিডিও দেখে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে গুলিয়ে ফেলে।
সামাজিক প্রথা ও ধর্মীয় অনুশাসন এর ভিত্তিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শনাক্তকরণে সবাই
উত্তর দিতে সক্ষম হয়েছে।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে
শ্রেণীকক্ষে পাঠ পরিচালনার সুবিধার জন্য একজন শিক্ষকের কর্ম সহায়ক গবেষণা পরিচালনা
খুবই গুরুত্বপূর্ণ । মানসম্মত প্রাথমিক অর্জনে শিক্ষার্থীদের শ্রেনিভিত্তিক অর্জন
উপযোগী যোগ্যতাগুলোর উপর জোর দিতে হবে। নির্ধারিত শ্রেণির সুনির্দিষ্ট অর্জন
উপযোগী যোগ্যতাগুলো অর্জন করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রান্তিক যোগ্যতা
অর্জন দুষ্কর হয়ে ওঠে। প্রাথমিক স্তরে “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়। তাই শিক্ষার্থীরা যদি পাঠের প্রতি অমনোযোগী থাকে কিংবা পাঠের প্রতি আগ্রহ না
দেখায় তাহলে তাদের শিখন স্থায়ী হবে না। “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” শিক্ষণ শক্তিশালী
হবে যখন শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তু সংশ্লিষ্ট জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ
অর্জন করতে পারবে এবং তা নিজেদের আচরণ ও কাজে প্রয়োগ করতে সমর্থ হবে। যেহেতু
“বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” একটি সমন্বিত বিষয় সেহেতু বিষয়টি শিক্ষাদানের জন্য একজন
শিক্ষক হিসেবে বিষয়টির প্রধান প্রধান প্রত্যয় সম্পর্কে ধারনা থাকা এবং বিভিন্ন
শিক্ষা কৌশল জানা অত্যাবশ্যক। এছাড়াও শিক্ষকে হতে হবে চৌকস, বিশয়জ্ঞান সম্পন্ন
যিনি তার উপস্থাপনা, বাচনভঙ্গি ও কৌশলের মাধ্যমে পাঠদানকে আনন্দদায়ক করে তুলবেন
এবং শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য
প্রয়োজনীয় কৌশল অবলম্বন করবেন। যেমন আমি আমার গবেষণা কর্মটি পরিচালনা করতে গিয়ে
দেখেছি শিক্ষকের আন্তরিকতাই শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের পূর্বশর্ত । আমার কর্ম জীবনে
পরবর্তীতে এ ধরনের গবেষণা কার্য চালিয়ে যাব ,ইনশাআল্লাহ ।
No comments:
Post a Comment